সভাপতির অনুপস্থিতে সিনিয়র সহ সভাপতি শিবলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় গলওয়ের কনাক্ট হোটেলে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিউনিটির শূন্য পদে নিয়োগ, ২৫ শে ডিসেম্বরের অনুষ্ঠান, কমিউনিটিকে আরো কিভাবে গতিশীল করা যায় এগুলোই ছিল মূল বিষয়। হাঁটি হাঁটি করে গলওয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটির বয়স কম হয়নি, কিন্তু ওয়ার্ক পারমিট আর স্টুডেন্টের জাঁতাকলে কমিউনিটি তার মূল লক্ষ্যে যেতে প্রায়ই হিমশিম খেতে হয়।
শুরুটা হয়েছিলো ওয়ার্ক পারমিটে যারা এসেছিলেন তাদের হাত ধরেই। বাংলাদেশ কমিউনিটি যখন প্রথম গঠন করা হয়েছিল, তখন এর কারিগর স্টুডেন্ট ভিসায় যারা এসেছিলেন তাদের হাত ধরেই, তারা পড়ালেখা নিয়ে ব্যাস্ত থাকায় ওয়ার্ক পারমিটে আসা সিনিয়র কিছু লোকের হাতে(যারা ওয়ার্ক পারমিটে এসেছিলেন) দিয়েছিলো। কিন্তু তখনকার কমিটিগুলো স্টুডেন্টদেরকে সবসময়ই কমিটির বাহিরে রেখে সমাজের ভিতর বিভেদ সৃস্টি করে রেখেছিলো, উপেক্ষিত হয়েছে তাদের গ্রহনযোগ্যতা।
বার বার হোচট খেয়েছে সবাই মিলে এক হয়ে কাজের গতি। তাই অতীতের কমিটিগুলো কখনো সফলতার আলোর মুখ দেখেনি। এখন সময় পাল্টে গেছে, একঝাঁক তরুন সাবেক ছাত্র, যারা এখন অনেক পরিনত, হাল ধরেছেন এ কমিটির। এ তরুন প্রজন্ম কমিটিতে আসার পরে গাত্রদাহ হয়েছে অনেক সাবেক গুটি কয়েক ওয়ার্ক পারমিটে আসা কমিউনিটি বিভেদ সৃস্টিকারী লোক। পুরো বাংলাদেশ কমিউনিটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করতে চেস্টার কমতি নেই বলে অভিযোগ করেছেন অনেক বাঙ্গালী।
সভার শুরুতে শিবলী চৌধুরী বলেন- কমিউনিটির কিছু সদস্য তাদের ব্যাক্তিগত সমস্যার জন্য কমিউনিটিকে সময় দিতে পারছেন না বলে তারা স্বেচ্ছায় সদস্যপদ ছেড়েছেন, তাই চারটি শূন্য পদে আমরা নুতন সদস্যর নাম উত্থাপন করলে কন্ঠভোটে পাশ হয়। যে চারজন নুতন দায়িত্ব পেলেন, তারা হলেন-সহ সভাপতি-ইমরান আহমেদ, সহ সভাপতি-সাইফুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক-ওবায়দুর রহমান ফারুক, কর্যকরী সদস্য-মো: মাসুদ।
নুতন সদস্য নিয়োগের পরে সাধারন সম্পাদক রাজু বলেন, এটা একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা যার যার জায়গা থেকে কমিউনিটির জন্য যেন ভাল কিছু করে যেতে পারি। আমাদের একটা স্কুল দরকার, মাদ্রাসার দরকার, এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
সাংগঠনিক সম্পাদক তামিম মজুমদার তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন- কমিউনিটির জন্য যারা সময় দিতে পারেননা,তাদের কমিউনিটিতে থেকে লাভ কি? আমাদের এমন কিছু কাজ করে যেতে হবে,যাতে করে পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের কথা স্নরন করেন অনেক সুন্দরভাবে। বাংলাদেশ কমিউনিটির ভিতর কোন বিভেদ সৃস্টিকারীরা যেন তাদের কালোথাবা না দিতে পারেন, তার জন্য সোচ্চার থাকতে হবে। আমরা আমাদের সেরাটা দেয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত। খালেদ তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন- ওয়ার্ক পারমিট আর স্টুডেন্ট নিয়ে বিভেদ সৃস্টির দিন আর নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশী, এটাই আমাদের বড় পরিচয়। আমরা এক হয়ে কাজ করে বাংলাদশের ভাবমূর্তি আরো উজ্বল করাই আমাদের লক্ষ্য। জাকির বুলবুল বলেন- সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সবাইকে আরো বেশি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। কমিউনিটি হবে সবার, এখানে আলাদা চোখে কাউকে দেখার কোন অবকাশ নেই।
এরপর যথাক্রমে বক্তব্য রাখেন জাকির বুলবুল, কাশেম,ইমরান আহমের, সাইফুল ইসলাম, লাবলু খাঁন, ফারুক, মাসুদ, সোহেল, অপু সহ আরো অনেকে। বক্তারা সবাই কমিউনিটিকে আরো কিভাবে গতিশীল করা যায়,তার উপর গুরত্ব দিয়ে মত প্রকাশ করেন। এরপরে সবার সন্মতিতে আগামী ২৫ শে ডিসেম্বর গলওয়ে বসবাসরত সকল বাংলাদেশীদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানের ঘোষনা দেনএবং তা হবে এ যাবতকালের সেরা বাঙ্গালীদের মিলনমেলা।
এদিকে সভার প্রায় শেষের দিকে উপস্থিত সদস্যরা বর্তমান সভাপতির উপর দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ তুলে বলেন-কমিউনিটির কাজ করতে গিয়ে অনেক বাঙ্গালী তাদের কাছে অভিযোগ করে বলেন-কিছু মুস্টিমেয় লোকদের জন্য কমিউনিটির বৃহৎ অংশের সাথে তার যোগাযোগ কম। এতে দূরত্ব সৃস্টি হচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে কমিউনিটির। অনুষ্ঠান শেষে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শিবলী চৌধুরী তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন- কমিউনিটি সফল করতে হলে প্রতিটি সদস্যের কাজের প্রতি আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। পরিশ্রম একদিন পূর্নতা লাভ করবে। নুতন সদস্যদের অভিনন্দনের পাশাপাশি ২৫ শে ডিসেম্বরের অনুষ্ঠান সফল করতে সবার সহযোগিতা চেয়ে সভা শেষ করা হয়।
News Link: https://www.dailynagorik.com/archives/6760